গাইবান্ধার গ্রামঅঞ্চলে আটার তরকারি খুবই জনপ্রিয় খাবার


গাইবান্ধা জেলা তথা উত্তর বঙ্গে গ্রামবাংলার চালের গুঁড়া ও মাংস দিয়ে তৈয়ারী আটার তরকারি খুবই জনপ্রিয়। এক সময় কলাপাতায় ও কলাগাছের প্লেটে ভোজ হত।
চেহলাম, আকিকা বা বিয়ে আমন্ত্রিত লোকজনদের কলাপাতায় করে বা কলার গাছের প্লেটে খাওয়ানোর রেওয়াজ সেই আদিকালের। লম্বা লাইন করে মাটিতে আসন পেতে বসিয়ে কলা গাছের প্লেট বিছিয়ে আটার তরকারি দিয়ে খাবার পরিবেশন করার রীতি প্রচলিত ছিল। তবে এখন ওয়ানটাইম প্লেটে এইসব অনুষ্ঠানে খাবার পরিবেশন করা হয়।
বর্তমান সময়ে চেহলাম অনুষ্ঠানে শহর এলাকায় লোক সমাগম কম হওয়ায় বিরানির ব্যবস্থা করা হয়। আর গ্রামে চেহেলাম অনুষ্ঠানে দেখা যায় হাজার হাজার লোকের সমাগম। এসব লোকজন শুধু মাত্র আটার তরকারি খাবার জন্য এসে থাকে।
নাম শুনে অনেকেই হয়ত ভুরু কুঁচকে ভাবতে পারেন এটা আবার কি জিনিস? তবে উত্তরবঙ্গের অনেকেই হয়ত এই গ্রামাঞ্চলের আটার তরকারি এর সাথে পরিচিত।
কূলখানি/চল্লিশা কিংবা কোন ধরণের মজলিশেই সাধারণত রান্না করা হয় এই চালের আটা আর গরুর মাংসে তৈরি। গরম মসলার গুড়ার ঘ্রাণ ও চমৎকার সাধে এই আটার তরকারি নাম শুনে অনেকের জিহ্বায় পানি এসে যায়।
মোটামুটি ভোরবেলা থেকে শুরু হয় এই খাওয়াদাওয়া, গ্রামের সকলেরই যেন অলিখিত দাওয়াত থাকে এতে। খোলা আকাশের নিচে কিংবা শামিয়ানা টাঙ্গিয়ে মাটিতে মাদুর বিছিয়ে ব্যবস্থা করা হয় লোক বসানোর। থালা হিসেবে ব্যবহার করা হয় কলাপাতা এখন ওয়ানটাইম প্লেটে। শুরুটা হয় হাতের আঙুলে একটুখানি লবণ গুঁজে দেয়ার মাধ্যমে।
এরপর ডেকচিতে করে আসে ধোয়া ওঠা গরম ভাত। ভাত বেড়ে দেয়ার পরপরেই আসে দুই অথবা তিন পিচ ঝোল ছাড়া মাংস তারপর বালতিতে করে এই মাংস মিশ্রিত আটার তরকারি। প্রথম ধাপে গণহারে সবাইকেই দেয়া হয় এক হাতা করে। খাওয়া শেষে একটা শান্তির ঢেকুস ছেড়ে পান চিবিয়ে চিবিয়ে সবাই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
আটার তরকারি পাক করে এমন একজন বলেন, আমি এই সব অনুষ্ঠানে রাত ১২টা থেকে পাক করা শুরু করি এবং সকাল ৮টা পর্যন্ত চলে। আর অনুষ্ঠানে লোকজন ভোরবেলা থেকে খেতে আসে। চলে দুপুর ১২টা এমনকি সারাদিন পর্যন্ত।
##