বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নির্যাতন, বেপরোয়া আচরণের সুষ্ঠু সমাধান প্রয়োজন


দেশের পাঁচ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে। তার মধ্য একটি হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর কিছু নেতার নির্যাতনসহ বেপরোয়া আচরণের অভিযোগ রয়েছে। এতে নষ্ট হচ্ছে ক্যাম্পাসের শিক্ষার পরিবেশ। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে উদ্বেগ-আতঙ্ক। এবার জাহাঙ্গীরনগরে নেতার মার খেয়ে হল ছাড়লেন ১৫ ছাত্রলীগকর্মী। ভুক্তভোগীরা সবাই তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তাদের অভিযোগ, হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী নিহান নিবিড় তাদের এক ছাত্রলীগকর্মীকে মারধর করেছেন। যে কারণে গত ৩০ আগস্ট রাতে তারা ২১১, ২১২, ২১৩ ও ২১৭ নম্বর কক্ষ ছেড়ে দিয়েছেন। মারধরে অভিযুক্ত নিহান নিবিড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী। তিনি হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী। হল সূত্রে জানা গেছে, ২৮ আগস্ট রাতে একটি অটোরিকশা বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হলের ছাত্রলীগের দুই কর্মীর মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেলে থাকা একজন মাথায় আঘাত পান। মোটরসাইকেলটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে ওই দুই ছাত্রলীগকর্মী তাদের হলের বন্ধুদের ডেকে অটোরিকশাটি আটক করে মওলানা ভাসানী হলের সামনে নিয়ে যান। তারা চালকের কাছে চিকিৎসার ব্যয়ভার এবং মোটরসাইকেলের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। পরে অটোরিকশার মালিক বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিসের এস্টেট শাখায় কর্মরত মো. খাইরুল বিষয়টি মওলানা ভাসানী হলের ছাত্রলীগের নেতাদের জানান। এ ঘটনায় হলের তিন তলায় সিনিয়র নেতাদের রাজনৈতিক ব্লকে ডেকে নিয়ে ৪৯তম ব্যাচের কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন নিবিড়। এ সময় একজনকে মারধর করেন। মারধরের ঘটনায় ৪৯তম ব্যাচের ছাত্রলীগের ১৫ কর্মী তাদের কক্ষ ছেড়ে দেন। তবে এরপর থেকে তারা হলের কোনো কক্ষে ওঠেননি। কেউ ক্যাম্পাসের বাইরে থাকছেন, কেউ হলের বন্ধুদের সঙ্গে বিছানা ভাগাভাগি করে থাকছেন। ৪৯তম ব্যাচের ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী জানান, ছোটখাটো কিছু হলেই সিনিয়ররা তাদের মারধর করেন। এর আগেও হলের এক নেতা তাদের একজনকে মারধর করেন, তখনও তারা কক্ষ ছেড়ে দিয়েছিলেন। এখন তারা সবাই তৃতীয় বর্ষে পড়েন, এখনও যদি মারধর করে তাহলে রাজনীতি করে কী লাভ? তাই তারা কক্ষ ছেড়ে দিয়েছেন। তবে এভাবে আর কত শিক্ষার্থীরা সিনিয়ারদের হাতে নির্যাতিত হবেন? ছাত্র রাজনীতির প্রভাব খাটিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর জুলুম করবেন। এর একটা বিহিত হওয়া দরকার। তাই হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হতে এসে, কোনো শিক্ষার্থীকে যেন ঠুংকো কারণে নির্যাতনের শিকার হতে না হয়। এর সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাস করছি।