শিক্ষকের যৌন লালসার শিকার ছাত্রীরা


মোহনপুরের বাটুপাড়া কারিগরি ও বাণিজ্যিক ইনস্টিটিউটের ‘ড্রেস মেকিং এন্ড টেইলারিং’ ট্রেড এক শিক্ষক একই ট্রেডের ছাত্রীকে প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ ও নির্যাতন করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই শিক্ষক ছাত্রীকে তিন বছরেরও অধিক সময় ধরে এমন ঘৃণিত কাজ করে আসছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ তোলেন এক ছাত্রী।
শুক্রবার (২৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১২টায় রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন (আরইউজে) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী শিক্ষক মাসুদ হোসেন সরকারের এমন যৌন লালসার শিকারের পৈশাচিক চিত্র তুলে ধরেন। শুধু ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীই নন; নানা প্রলোভনের টোপ ফেলে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আরও ৮-১০ অসহায় ছাত্রীকে এমন সর্বস্বান্ত করার চেষ্টা করেন ওই শিক্ষক। ভুক্তভোগী ছাত্রী সংবাদ সম্মেলনে নিজেসহ ৮-১০ জন ছাত্রীর সঙ্গে ওই শিক্ষকের নানা প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার কথপোকথনের রেকর্ড উপস্থাপন করেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক উপজেলার মৌগাছি ইউনিয়নের বাটুপাড়া গ্রামের মৃত সিদ্দিক সরকারের ছেলে এবং ওই ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আরজেদ হোসেন সরকারের চাচাতো ভাই।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, ‘২০১৯ জানুয়ারিতে আমি বাটুপাড়া কারিগরি ও বাণিজ্যিক ইনস্টিটিউটের ‘ড্রেস মেকিং এন্ড টেইলারিং’ গ্রুপ এ ভর্তি হই। এর আগে আমার জীবনের নানা উত্থান-পতন এবং বেশকিছু করুণ কাহিনী ঘটে গেছে। তাই স্থির করেছিলাম, কারিগরি থেকে পড়ালেখা করে নিজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠানের ‘ড্রেস মেকিং এন্ড টেইলারিং’ ট্রেড এর শিক্ষক মাসুদের যৌন লালসার শিকার হয়ে আমার জীবনটা একেবারে তছনচ হয়ে গেছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক ছাত্রী বলেন, ‘আমাকেও একইভাবে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করার কথা বলে কুপ্রস্তাব দেয়। কিন্তু আমি রাজি না হওয়ায় সে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। ওই শিক্ষক শুধু ছাত্রীকেই নয়; এলাকার দুজন বিবাহিত নারীকেও একইভাবে ফুঁসলিয়ে ধর্ষণ করেছে এবং লম্পট শিক্ষক নিজেই বিবাহিত ওই দুই নারীর বাচ্চাকে নিজের সন্তান বলেও দাবি করেছে। আমরা গরিব-অসহায় বলে আমাদেরকে এভাবে হেনস্তা করছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
অভিযুক্ত শিক্ষক মাসুদ হোসেন সরকারের নিকট মুঠোফোনে এসব বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সকল অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেই ফোন কেটে দেয়। তারপর শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অসংখ্যবার ফোন করা হলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।
বাটুপাড়া কারিগরি ও বাণিজ্যিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আরজেদ হোসেন সরকারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সানওয়ার হোসেন বলেন, ‘ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী আমার কাছে এসেছিলো। দিনের পর দিন ব্লাকমেইলিং করে তাকে যে ধর্ষণ করা হয়েছে এমন বেশ কিছু অডিও রেকর্ড ও ছবি আমাকে দিয়েছে। কিন্তু এগুলো যেহেতু ক্রিমিনাল কেইস। তাই ভুক্তভোগীকে থানায় কিংবা আদালতে মামলা করতে বলেছি। হয়তো সে ন্যায় বিচার পাবে।’ সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা-মা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র : দৈনিক সোনার দেশ