মোহনপুরের সেই হাবিবা চরম আতঙ্কে


রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ঘাশিগ্রাম ইউনিয়নের নির্যাতিতা সাবেক ইউপি সদস্য সেই শেখ হাবিবা খুন ও গুম হওয়ার ভয়ে আতঙ্ক দিন যাপন করছেন।
এসব থেকে পরিত্রাণ পেতে তিনি বুধবার (২৭ জুলাই) বেলা ১১ টার দিকে রাজশাহী নগরীর একটি রেস্তোরায় সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন।
নির্যাতিতা শেখ হাবিবা মোহনপুর উপজেলার সিংহমার গ্রামের মাসুদ রানার স্ত্রী ও সাবেক ইউপি সদস্য ও উপজেলা কৃষকলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, একজন সাবেক জনপ্রতিনিধি হিসাবে মানুষের বিভিন্ন বিপদে সহায়তার সুবাদে গত ১৯ জুলাই মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে তার এলাকার নজরুলের মেয়ের দুই বছরের দুধের শিশুকে উদ্ধারের জন্য মোহনপুর থানায় যায় এবং সহায়তা চাই।
ওসি তৌহিদুল ও এএসআই সোলায়মানের সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে এএসআই সোলায়মান বাচ্চা উদ্ধারে অসম্মতি জানাই এবং বলে তোমার কাজ করতে এমপি স্যারের নিষেধ আছে।
হাবিবা বারবার অনুরোধ করে বলে আপনারা অন্যায় করছেন, আমি কিন্তু বিষয়টি সাংবাদিকদের জানাবো তখন তাঁরা ক্ষিপ্ত হয় এবং বলে বিষয়টি এমপি স্যারের কাছে জানতে হবে এবং ওসি সাহেব দুই তিন জায়গায় মোবাইলে কথা বলেন।
কথা বলার ভঙ্গিমায় মনে হয় স্থানীয় এমপি ও তাঁর লোকজনের সাথে কথা বলছেন ওসি। কিছুপরে এমপির বন্ধু উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ইকবাল হোসেন থানায় এসে বলে যে, এই হাবিবা এমপির বিরুদ্ধে কথা বলে তাকে উচিৎ শিক্ষা দেন। তখন তারা হাবিবাকে গালমন্দ ও হুমকি ধামকি শুরু করে এবং কেনো এমপির বিরুদ্ধে কথা বলি বার বার উল্লেখ করে।
এক পর্যায়ে দুইজন মহিলা কনস্টেবল হাবিবাকে চড় থাপ্পড় মারে এবং ওই দিনের ডিউটি অফিসার লতিফাসহ কয়েকজনে হাবিবাকে ওসির রুম থেকে টেনে হেঁচড়ে পাশের এসআইদের রুমে নিয়ে গিয়ে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটাই এবং এমপির বিরুদ্ধে কথা না বলতে হুশিয়ারি দেয় এবং হিজাব কেড়ে নিয়ে রাতভর থানায় আটকিয়ে রাখে।
পরদিন সকাল আনুমানিক ১১ টার দিকে এমপির পিএস রাজাকার পুত্র একরামুল হক বিজয় এমপির ঘনিষ্ঠ লোক হিসেবে পরিচিত ডলি বেগমকে নিয়ে থানায় আসে এবং বিজয় হাবিবার কাছে এসে উচিৎ শিক্ষা দেওয়া হবে বলে হুমকি দেয়।
এরপর ডলি বেগমকে বাদী করে একটি ও এসআই রোফ কে বাদী করে আরেকটি মোট দুইটি মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেল হাজতে প্রেরন করে।
হাবিবা সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করেন, গত ২৩ শে মার্চ-২০২২ ইং তারিখে গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমপি হয়ে হঠাৎ ধনী শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। যেখানে হাবিবা এমপিকর রাজাকার পুত্র, মানুষের জমি দখলকারি উল্লেখ করে বক্তব্য দেয় । ওই বক্তব্য দেওয়ার কারণে এমপির নির্দেশে তাকে পুলিশ দিয়ে এই অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে।
হাবিবা তাকে নির্যাতনে জড়িত এমপিসহ সকলের বিচার দাবি এবং এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে জুডিশিয়াল তদন্ত দাবি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট এই ঘটনার সাংগঠনিক বিচার দাবি করেছে। এমপি ও তার লোকজনের অত্যাচারে হাবিবার পরিবার নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
হাবিবা সাংবাদিক সম্মেলনে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলা সময় তার নির্যাতনের বর্ণনা দেন এবং কেঁদে ফেলেন।
সংবাদ সম্মেলনে হাবিবার মা ওই ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মিনা বেগম, স্বামী মাসুদ রানা ও এক শিশু কন্যা উপস্থিত ছিলেন।
##