বাপেক্সের শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী

নিয়োগ ও স্থায়ীকরণে অনিয়ম-দুর্নীতি

ভুয়া অভিজ্ঞতা সনদ ও প্রয়োজনীয় শিক্ষাসনদ না থাকার অভিযোগ * অভিযোগ পেয়েছি, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে-এমডি, বাপেক্স

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১ | ৭:৪৫ 177 ভিউ
ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১ | ৭:৪৫ 177 ভিউ
Link Copied!

লোক নিয়োগ এবং স্থায়ীকরণ-দুটিতেই ভয়াবহ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (বাপেক্স) বিরুদ্ধে। নিয়োগ বিধি লঙ্ঘন করে ভুয়া অভিজ্ঞতা সনদ এবং প্রয়োজনীয় শিক্ষাসনদ ছাড়াই বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে গত কয়েক বছরে।

এরমধ্যে অস্থায়ীভাবে ৮৫ জনসহ বিভিন্ন সময়ে পাঁচ শতাধিক লোকবল নিয়োগ দেওয়ার পর তাদের স্থায়ীকরণ করা হয়। যেখানে শতাধিক জনের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিজস্ব অনুসন্ধান, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ও বিভিন্ন সময়ে কর্তৃপক্ষের কাছে জমা হওয়া সংশ্লিষ্টদের অভিযোগের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

জানা যায়, লোক নিয়োগে দুর্নীতির সূত্রপাত শুরু ১৪২ জন কর্মকর্তা নিয়োগের মাধ্যমে। এছাড়া অস্থায়ী নিয়োগ পাওয়া ৮৫ কর্মচারীকে স্থায়ী করতে গিয়েও বড় ধরনের কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। এদিকে উল্লিখিত অভিযোগ তদন্ত করার জন্য পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ও বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর চিঠি দিয়েছে কর্মচারীদের একটি গ্রুপ।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগ দেওয়া হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনেও। এছাড়া বিচার চেয়ে বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ১৩ জনকে নোটিশ (নোটিশ ডিমান্ডিং জাস্টিস) পাঠিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এবিএম সিদ্দিকুর রহমান খান। বাপেক্সের ১৭ কর্মীর পক্ষে ২৮ নভেম্বর তিনি এ নোটিশ পাঠান। ওই নোটিশও আমলে নেয়নি বাপেক্স। এরপর রিট দায়ের করা হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগকারীদের একজন বলেন, বাপেক্সের ১৪২ জন কর্মকর্তা নিয়োগের ঘটনায় একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি তাদের রিপোর্টে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করলেও অদ্যাবধি কারও বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

যে কারণে অনিয়মের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া সেসব কর্মকর্তা এখন বাপেক্সের বিভিন্ন শাখায় বড় ধরনের সিন্ডিকেট গড়ে তোলার সুযোগ পায়। এরপর থেকেই মূলত সব নিয়োগেই অনিয়ম-দুর্নীতি হয়।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ম্যানেজিং ডিরেক্টর বা এমডি) মোহাম্মদ আলী জানান, নিয়োগ নিয়ে যেসব অনিয়মের কথা বলা হচ্ছে সেগুলো তার আমলে হয়নি। তিনি যোগদানের পর অল্প কিছু কর্মচারীকে অস্থায়ী থেকে স্থায়ী করা হয়েছে।

তাও উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী। তবে নিয়োগে অনিয়ম নিয়ে বেশকিছু অভিযোগ তিনি পেয়েছেন বলে জানান। এসব অভিযোগ তদন্ত করা হবে। ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, প্রথম দফায় নিয়োগ পাওয়া ১৪২ জন কর্মকর্তার মধ্যে কমপক্ষে ২০ জনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি, প্রতারণার অভিযোগ ছিল। তারাই এখন পুরো বাপেক্সে গড়ে তুলেছে বিশাল দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট। নামে-বেনামে তাদের মাধ্যমে চলছে নিয়োগ বাণিজ্য। তাদের অঙুলির ইশারায় চলছে বাপেক্স। প্রশাসনের সর্বোচ্চ থেকে সর্বনিম্ন-সবাই চলে তাদের ইশারায়।

জানা যায়, বাপেক্সের এই সিন্ডিকেট সদস্যদের মধ্যে একাধিক অসাধু পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক, উপমহাব্যবস্থাপক, সিবিএ নেতাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম রয়েছে। সম্প্রতি বাপেক্সের ৮৫ কর্মচারীকে স্থায়ীকরণের জন্য একটি যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিতেও কৌশলে ঢুকে পড়েন সিন্ডিকেটের কয়েকজন সদস্য।

অভিযোগ উঠেছে-তারা কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই না করেই কর্মচারীকে স্থায়ী করেন। শুধু তাই নয়, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৪ জনকে স্থায়ী করার সুপারিশ করলেও সেটি মানা হয়নি। উলটো মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাদ দিয়ে ১৩ জনকে কম্পিউটার অপারেটর হিসাবে স্থায়ী করা হয়।

সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবীর পাঠানো নোটিশ ডিমান্ডিং জাস্টিস থেকে জানা যায়, জহিরুল ইসলাম নামের এক কর্মচারীর অফিস সহকারী, কম্পিউটার অপারেটর ও জুনিয়র ক্লার্ক হিসাবে চাকরি করার অভিজ্ঞতা থাকলেও তাকে স্থায়ী করা হয়নি। আমির হামজা নামের একজন অস্থায়ী কর্মচারীর চাকরি স্থায়ীকরণে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।

আমির হামজার বিরুদ্ধে অভিযোগ-তিনি চাকরিতে যোগদানের সময় ২০০৫ সালের সার্টিফিকেট জমা দেন। যাচাই-বাছাই কমিটি তাদের তদন্তে তার জমা দেওয়া শিক্ষা সনদটি জাল বলে প্রমাণ পেলেও চাকরি স্থায়ী করা হয়।

শাহ আলম নামের একজন কর্মচারী চাকরি ছেড়ে চলে গেলেও তার পদে টেকনিক্যাল সার্ভিস বিভাগে কর্মরত অস্থায়ী কর্মচারী ইব্রাহীম খলিলকে স্থায়ী করা হয়।

কোম্পানির সাংগঠনিক কাঠামোয় মনির হোসেন (লিফট টেকনিশিয়ান ফোরম্যান), মাঈনুদ্দিন (অস্থায়ী লিফট অপারেটর), শামীম (অস্থায়ী সিসিটিভি অপারেটর), হীরা মিয়া (পাম্প অপারেটর), শিহাব মিয়া (সিসিটিভি অপারেটর), আব্দুর রাজ্জাক বাপ্পী (পাম্প অপারেটর), শিহাব মিয়া (সিসিটিভি অপারেটর) এবং রিয়াজ উদ্দিনের (সোলার মেনটেন্যান্স) পদ না থাকা সত্ত্বেও তাদের অন্য পদে স্থায়ী করা হয়।

এছাড়া যেসব পদে নিয়মিতকরণ করা হয়েছে, তাদের সেসব পদে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা নেই। হেলপার পদের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ এবং এক বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। যাচাই-বাছাই কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী নিয়োগকৃতদের অনেকের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলেও অভিজ্ঞতার সনদ নেই। কিন্তু এরপরও চাকরি স্থায়ী করা হয়।

আল মাসুদ নামের এক অস্থায়ী ফায়ার চাকরি প্রবিধানমালা অনুযায়ী অযোগ্য থাকার পরও তাকে ফায়ার সেফটি ফোরম্যান হিসাবে নিয়োগ দিয়েছে যাচাই-বাছাই কমিটি। অথচ এই পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য এসএসসি পাশ সনদ ও এক বছরের অভিজ্ঞতার সনদ প্রয়োজন। দেখা যায়, আল মাসুদের শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ। আবার অভিজ্ঞতার সনদও নেই।

মাঈনুদ্দিন ছিলেন বাপেক্সের লিফট টেকনিশিয়ান। কিন্তু এই পদ না থাকায় তাকে হেলপার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। অথচ এই পদে নিয়োগ পেতে হলে অষ্টম শ্রেণি পাশ ও এক বছরের অভিজ্ঞতা সনদ থাকতে হবে। মাঈনুদ্দিনের এ সনদ নেই। হীরা মিয়া ছিলেন পাম্প অপারেটর।

কিন্তু এ পদ না থাকায় তাকে হেলপার মেকানিক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। অথচ এ পদে নিয়োগ পাওয়ার মতো কোনো যোগ্যতা তার নেই। আব্দুর রাজ্জাক বাপ্পী পাম্প অপারেটর। তাকে নিয়োগ দেওয়া হয় হেলপার মেকানিক পদে। এ পদে নিয়োগ পাওয়ার জন্য বাপ্পীর কোনো অভিজ্ঞতা সনদ নেই।

শামীম ছিলেন সিসিটিভি অপারেটর। তাকে নিয়োগ দেওয়া হয় ল্যাব টেকনিশিয়ান পদে। এ পদে নিয়োগ পাওয়ার জন্য যে অভিজ্ঞতা থাকা দরকার ছিল, সেটা তার নেই। শিহাব মিয়া ছিলেন সিসিটিভি অপারেটর। তাকেও হেলপার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়, যদিও এ পদে নিয়োগ পাওয়ার জন্য তার কোনো অভিজ্ঞতা নেই।

মাসুদ জামাল মুক্তিযোদ্ধার পোষ্য হিসাবে নিয়োগ পেয়েছিলেন কমপিউটার অপারেটর হিসাবে। কিন্তু যাচাই-বাছাই কমিটি কৌশলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বিলুপ্ত করে তাকে স্থায়ী করেনি। অন্যদিকে মাহফুজ আলম নামের একজনকে হেলপার হিসাবে প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতার সনদ না থাকার পরও স্থায়ী করা হয়।

জহিরুল ইসলাম ‘কাজ নাই মজুরি নাই’ ভিত্তিতে জুনিয়র ক্লার্ক হিসাবে নিয়োগ পান। যাচাই-বাছাই কমিটি তাদের সুপারিশে স্থায়ীকরণের যোগ্য হিসাবে উল্লেখ করলেও তাকে স্থায়ী করা হয়নি।

অপরদিকে সাকিউর রহমান, হাবিবুর রহমান, জিএম তৌহিদুল ইসলাম, মাহাবুবুর রহমানকে প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতার সনদ না থাকার পরও স্থায়ী করা হয়। কিন্তু বাশার ইসলামের সব ধরনের অভিজ্ঞতা ও শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকার পরও তার চাকরি স্থায়ী করা হয়নি।

একইভাবে সবকিছু ঠিক থাকার পরও রাসেল মিয়া, মোহাম্মদ জুম্মন, এনামুল হক ভূঁইয়া (মুক্তিযোদ্ধা পোষ্য) নুরুজ্জামান, জসিম উদ্দিন, সাইদুর রহমানের সব ধরনের যোগ্যতা থাকার পরও স্থায়ী করা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। কিন্তু খান সিহাব উদ্দিনের পদ পরিবর্তনের কোনো নির্দেশনা না থাকার পরও যাচাই-বাছাই কমিটি তার চাকরি স্থায়ী করে।

এছাড়া জাহিদুর রহমান, মনির উদ্দিন, মো. শাহিন, হিরণ মহাজন, বাবুল হোসেনের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও অন্যান্য যোগ্যতা থাকার পরও তাদের চাকরি স্থায়ী করা হয়নি।

এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে যাচাই-বাছাই কমিটির একজন সদস্য জানান, আদালতের রায়ের ভিত্তিতে তারা নিয়োগগুলো চূড়ান্ত করেছেন। যাদের পক্ষে রায় ছিল তারা নিয়োগ পেয়েছেন আর যাদের পক্ষে রায় ছিল না তারা নিয়োগ পাননি। তারপরও অভিযোগগুলো তারা দ্বিতীয় দফায় যাচাই-বাছাই করে দেখবেন।

এর আগে ২০০৫ সালেও একইভাবে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে ১৪২ কর্মকর্তার নিয়োগ নিয়ে বড় ধরনের অনিয়ম হয়েছিল। সেটিও ওই নোটিশ ডিমান্ডিং জাস্টিসে উল্লেখ করা হয়। ওই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তদন্তে তখন অভিযোগ প্রমাণিত হয়। বাণিজ্যিক অডিট দলের পক্ষ থেকে নিরীক্ষা আপত্তি তোলা হয়।

অডিটে এসব কর্মকর্তার বেতনভাতাও বন্ধ করে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। কিন্তু বাস্তবে কোনো ফল হয়নি। উলটো নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তারাই এখন বাপেক্সের সবচেয়ে শক্তিশালী। অনেকে ইতোমধ্যে পদোন্নতি নিয়ে বড় বড় পদে বসেছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই সময় বাপেক্সে ১৫টি পদে লোক নিয়োগের জন্য দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। এতে প্রায় ৭ হাজার আবেদন জমা পড়ে। কিন্তু শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও পোস্টাল অর্ডার ছাড়াই নির্দিষ্ট সময়ের এক থেকে দেড় মাস পরে ত্রুটিপূর্ণ আবেদনপত্র জমা দিয়েও অনেকে নিয়োগ পেয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বাপেক্স কর্মকর্তাদের একটি চক্র কৌশলে ৫ হাজার আবেদনপত্র থেকে পোস্টাল অর্ডার গায়েব করে দেয় এবং ওইসব পোস্টাল অর্ডার ভাঙিয়ে টাকা আত্মসাৎ করে। এ খবর ফাঁস হয়ে গেলে বাপেক্সের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের পোষ্যদের চাকরি দেওয়ার জন্য পুনঃনিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া অথবা আবেদনপত্র জমা নেওয়ার সময় বাড়াতে লিখিত চিঠি দেন।

কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা বিবেচনা না করে ১ হাজার আবেদনকারীকে লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করে। এরপর লিখিত পরীক্ষা শেষে ৩ মাসের মধ্যে মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে তড়িঘড়ি করে ১৪২ জনকে নিয়োপত্র দেয়।

আরও জানা যায়, উপমহাব্যবস্থাপক পদে এক কর্মকর্তাকে নিয়োগবিধি লঙ্ঘন করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এই পদের জন্য প্রথম শ্রেণির নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে কমপক্ষে ৫ বছরের অথবা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ৭ বছরের অভিজ্ঞতা ও ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক দ্বিতীয় বিভাগ চাওয়া হয়।

কিন্তু যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সাবেক ওই কর্মকর্তা তৃতীয় বিভাগে স্নাতক পাশের সনদ দিয়ে নিয়োগ পান। তিনি ছিলেন, বাপেক্সের তৎকালীন নিয়োগ কমিটির এক সদস্যের ভাই।

ভুয়া অভিজ্ঞতার সনদ ও ত্রুটিপূর্ণ আবেদন জমা দিয়ে বাপেক্সের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নিকটাত্মীয়ও নিয়োগ পেয়েছিলেন ওই জোয়ারে। তিনি বর্তমানে বাপেক্সের হিসাব ও অর্থ শাখার সবচেয়ে প্রভাবশালী কর্মকর্তা।

এছাড়া তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পোষ্য কোটায় তার দুই আত্মীয়কে (ভাগনে ও ভাগনি) নিয়োগ দেওয়া হয়। অথচ চাকরিবিধি অনুযায়ী পোষ্য কোটা বলতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর সন্তানকে বোঝানো হয়।

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদনপত্র জমা দেওয়ার নির্ধারিত তারিখ পার হওয়ার ১ মাস ১৯ দিন পর আবেদন করে ভূতত্ত্ব কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পেয়েছেন এক কর্মকর্তা।

একইভাবে নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে আবেদনপত্র জমা দিয়ে ট্রেইনি ড্রিলার পদে নিয়োগ পেয়েছেন ৬ জন এবং সহকারী ব্যবস্থাপক ভূতত্ত্ব পদে ৩ জন নিয়োগ পান। নির্ধারিত সময়ের পর অসম্পূর্ণ আবেদনপত্র জমা দিয়ে প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়াই সহকারী ব্যবস্থাপক (সাধারণ) পদে নিয়োগ পান এক কর্মকর্তা।

এছাড়া সহ-কর্মকর্তা পদে একজন, সহ-ব্যবস্থাপক (সাধারণ) পদে একজন ও সহ-সমন্বয় কর্মকর্তা পদে একজন ভুয়া অভিজ্ঞতা সনদ জমা দিয়ে নিয়োগ পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বাপেক্সের একটি গ্রুপ পেট্রোবাংলার তৎকালীন চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে চিঠি দেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে পেট্রোবাংলার তৎকালীন তিনজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তাদের তদন্তেও এসব অভিযোগের প্রমাণ মেলেছিল। কিন্তু নিয়োগপ্রাপ্ত সবাই সিন্ডিকেট সদস্যদের মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে নিয়োগ বাগিয়ে নেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হয়নি।

ট্যাগ:

শীর্ষ সংবাদ:
নান্দাইলে বাড়ির সীমানাকে ক্রেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত -১ চারঘাটের কুখ্যৎ মাদক সম্রাট কালু মদাক ও অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার! রাজশাহীতে ডিবির অভিযানে ৪ লাখ টাকার ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার ৪! রাজশাহীতে ক্রেতা সেজে মোটরসাইকেল চুরি,আটক ১! রাজশাহী শাহমুখদুম থানায় কাভার্ড ভ্যান-সহ ৪ চোর গ্রেপ্তার! নান্দাইলে আল আমিনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার -১ লালপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে এক নারীর মৃত্যু নাটোরের গুরুদাসপুরে বাসের ধাক্কায় এক নারী নিহত আগুনে পুড়ে নিঃস্ব হয়ে গেলো স্বপন দেবনাথের একমাত্র বসতঘর। মান্দায় জমি সংক্রান্ত বিরোধে ১৩ জন আহত সিংড়ায় রাস্তা নির্মাণ কাজের ধীরগতি,শ্রমিক অফিসে উল্টে পড়ল ট্রাক দুর্গাপুরে ওএমএস ডিলারের অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন নান্দাইলে বিশ্ব যক্ষা দিবস উপলক্ষে রেলি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত। রাজশাহীতে বিয়ের নাটক করে তরুণীকে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগ প্রেমিকের বিরুদ্ধে! নান্দাইলের জাহাঙ্গীর পুরে দায়ের কোপের আঘাতে নিহত-১ ও আহত-১ মহাদেবপুরে গৃহহীন ও ভুমিহীনদের মধ্যে ঘর বাড়ি বিতরণে প্রেস ব্রিফিং রাজশাহীতে শিশু ধর্ষণের দায়ে প্রতিবেশীর যাবজ্জীবন! ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ও গুজব প্রতিরোধ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা! জয়পুরহাটে চলাচল শুরুর আগেই হুমকিতে সেতু ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে চতুর্থ পর্যায়ে জমি ও গৃহ হস্তান্তরের শুভ উদ্বোধন