ডিমলায় ঘরবাড়ি কেড়ে নিল সর্বগ্রাসী তিস্তা নদী


নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড ছোটখাতা গোড়িংপারের মানুষের কেরে নিচ্ছে সর্বনাশা তিস্তা নদী। শত শত মানুষের বসবাস এই নদীর ধারে।
বর্ষা নেই একটু সুযোগ পেলেই তছনছ করে দেয় মানুষের বাড়িঘর ও আবাদি জমি। চরাঞ্চলে নদীর পাশে যারা মাথা গোজার ঠাই করে বসে তাদেরই জীবন হয়ে উঠে ভয়ংকর।
এইসব এলাকায় যাদের বাস, তারা নিতান্তই দিন মজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ। কোন রকমে দিন আনে দিন খায়। অত্যন্ত কষ্ট করে কোনমতে খাবারটুকু জোগার হলে ও নেই তাদের রাতের ঘুমের শান্তি।
কখন যে কিরুপ ধারণ করে বসে পড়ে এই ছলনাময়ী কল্পনাময়ী ও বহুরুপী ভোগবিলাসী তিস্তা নদী। বারংবার আচমকার মত আসে রাক্ষসী ঢেউ ও ভয়াবহ স্রোত। সেই ঢেউয়ে স্রোতে ভেসে চলে যাওয়া জনজীবন বিপর্যস্ত।
কোথাও কোন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মত আজও কোন মানুষ মিলেনি ঐ গ্রামে। সারা দেশে অসংখ্য নদ নদীর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রন্থ পরিবারের মাঝে দেখা গেছে অনেক সহযোগিতা পেয়েছে।কিন্তু দুঃখের বিষয় হলেও সত্য ইউপি চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে উপজেলা ইউ এন ও মহোদয় ও এসিল্যান্ড সহ নীলফামারী জেলা পর্যন্ত অনেক আবেদন করে ও কোন সুফল পাওয়া যায়নি।
উক্ত গ্রামের বাসিন্দা আলমগীর হোসেন, শফিকুল ইসলাম, শাহিন মিয়া, হামিদুল সহ আরও অনেকে সংবাদকর্মীদের ভিডিও সাক্ষাৎকারে বলেন, এ বছরে আকাশের ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে দফায় দফায় কয়েক বার তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যায় প্লাবিত হয়।
এই নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে আমাদের তিস্তা পারের বসবাসকারী মানুষের প্রতিটি রাত কাটে নিঘুমে। আবার বন্যার পানি কমতে শুরু করলে তিস্তা নদীর পানির স্রোত তীব্র হয়ে উঠে ও গতিবেগের পরিবর্তন ঘটে তখন আমাদের তিস্তা পারের মানুষের ভাগ্য মন্দ হয়।
এবারে কয়েকবার নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে আমার নদীর পাড়ে ৩ বিঘা আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যায় তবুও আমাদের ততটা সমস্যা ছিল না। কিন্তু গত বন্যায় এবার আমার বসবাসের শেষ সম্বল ভিটামাটি সেটাও কেড়েনিলো তিস্তা নদী এখন জায়গা জমি না থাকায় কোথায় যাব কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। নিরুপায় হয়ে মেম্বার, চেয়ারম্যানকে বললে তারা এখনো আমাদের কোন খোঁজ খবর নেয়নি। আমরা কখনো কারো কোন সহযোগিতা পাইনি। দিন দিন নদীর ভঙ্গন বৃদ্ধি পাচ্ছে,আমাদের দেখার কেউ নাই।
গেল বন্যায় শুধু গোড়িং পারের ১৩ টি পরিবারসহ আরো কত পরিবার নদীর কাছে হার মেনে বাড়ি ঘর অন্য যায়গায় নিতে বাধ্য হয়েছে। তাই ছোটখাতা গোড়িং পারার মানুষেরা জোড়দাবী করে বলেন, শুধু ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যদি নদীর ধারে একটু বাধের ব্যবস্থা করা হতো তাহলে আমাদের দুঃখ কষ্ট অনেকাংশে লাঘব হত। তিস্তা নদীর ধারে বাধের ব্যবস্থা করে গ্রামের উন্নয়নে জনজীবন রক্ষার জন্য উর্ধতন মহলের প্রতি নেকদৃষ্টি কামনা করছেন ছোটখাতা তিস্তা পারের মানুষ।
তবে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, আমি বিষয়টা জেনেছি কিন্তু সময় সল্পতার করনে সেখানে দেখতে যেতে পারি নাই। আগামীকাল আমি সেখানে যাব। এরপর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারে সাহায্য সহযোগিতা করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।
##